দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মােঃ রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক মােছা: কামরুন্নাহারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫২ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখাসহ হস্তান্তর/রূপান্তর/স্থানান্তরের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের মামলায় তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরােধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা তৎসহ দন্ডবিধির ১০৯ ধারায উল্লেখ করা হয়েছে।
দুদক কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা (সজেকা) এর উপসহকারী পরিচালক নীল কোমল পাল বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) এই মামলা দায়ের করেন। গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরিফ সাদেক।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, প্রকৌশলী মােঃ রবিউল ইসলাম এবং তার উপর নির্ভরশীলদের বিরুদ্ধে আনীত জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযােগের অনুসন্ধানকালে ২০০১-০২ করবর্ষ থেকে ২০১৯-২০ করবর্ষ পর্যন্ত তাদের স্থাবর, অস্থাবর, দায়-দেনা ও সম্পদ অর্জনের উৎস সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সংগ্রহপূর্বক পর্যালােচনা করা হয়। রেকর্ডপত্র পর্যালােচনায়, মােছাঃ কামরুন্নাহারের নিজ নামে ১০ লাখ ৯ হাজার ৭৫০ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫৭ টাকার অস্থাবর সম্পদ মােট ২৫ লাখ ৭৭ হাজার ৩০৭ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।
উক্ত সময়ে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শিত পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় ৬৫ লাখ ৯৬ হাজার ২৯২ টাকা এর মধ্যে মাে: রবিউল ইসলামকে উপহার হিসেবে প্রদান ৫০ হাজার। সুতরাং তার অর্জিত মােট সম্পদের মূল্য ৯১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৯৯ টাকা।
অনুসন্ধানকালে তার গ্রহণযােগ্য আয় অর্থাৎ চাকুরির বেতনভাতা ও রেমিটেন্স প্রাপ্তি বাবদ আয় ৫২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৪৭ টাকা। অর্জিত ৯১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৯৯ টাকার সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার আয় ৫২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৪৭ টাকা। অর্থাৎ তার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ ৩৯ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫২ টাকা।
উক্ত জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে তিনি সন্তোষজনক কোন ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হন। তার স্বামী মােঃ রবিউল ইসলাম। তিনি একজন সরকারি কর্মচারী। আর তার স্ত্রীর মােছা: কামরুন্নাহারের সম্পদ অর্জনের প্রদর্শিত বৈধ উৎস ব্যতীত অন্য কোন আয় না থাকা সত্ত্বেও তিনি তার ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ অর্থকে বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে তার স্ত্রীর মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা উপহার প্রাপ্ত হয়েছেন। অর্থাৎ তিনি তার স্ত্রীর মােছা: কামরুন্নাহারকে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখতে সহায়তা করেছেন।
বিধায় অভিযুক্ত মােছা: কামরুন্নাহারের জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫২ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখাসহ হস্তান্তর/রূপান্তর/স্থানান্তর করতঃ এবং মােঃ রবিউল ইসলামের উক্ত সম্পদ অর্জনে সহায়তা করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরােধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা তৎসহ দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এমতাবস্থায়, অভিযুক্ত মােছা: কামরুন্নাহার ও তার স্বামী- মােঃ রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরােধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা তৎসহ দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
#