দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে দুই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ ও তার স্ত্রী (গৃহিনী) খন্দকার নুরুন নাহার লোটাসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১৮ অক্টোবর) দুদকের সহকারী পরিচালক পাপন কুমার সাহা বাদী হয়ে সমন্বিত কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের দুদক আইনের ২৭(১) এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন।
গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপ পরিচালক মুহাম্মদ আরিফ সাদেক। মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামীরা পরস্পর সহযোগিতায় অসৎ উদ্দেশ্যে দুই কোটি ২১ লাখ ৭ হাজার ২৯৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন। অভিযুক্ত শাহজাহান আহমেদ ১৯৮৭ সালে বস্ত্র অধিদপ্তরে ড্রাফটসম্যান পদে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে ডেপুটি জেলার হন।
বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ সিনিয়র জেল সুপার পদে কর্মরত। এর আগে শাহজাহান আহমেদ ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে কর্মরত ছিলেন।
দুদকের অনুসন্ধানকালে আসামী শাহজাহান আহমেদের নামে ৮৫ লাখ ৯১ হাজার ৩৯৫ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ১৩ লাখ ১৯ হাজার ১৯৪ টাকা অর্থাৎ ৯৯ লাখ ১০ হাজার ৫৮৯ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। তার পারিবারিক ব্যয় ও পরিশোধিত কর বাবদ ব্যয়সহ মোট ব্যয় পাওয়া যায় ৩১ লাখ ০৮ হাজার ৬৭৪ টাকা। সব মিলে তার অর্জিত অর্থ ও সম্পদের ১ কোটি ৩০ লাখ ১৯ হাজার ২৬৩ টাকা। অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী উক্ত অর্থ-সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার মোট বৈধ আয় পাওয়া যায় মাত্র ৫৮ লাখ ১০ হাজার ৪১ টাকা। অর্থাৎ তার অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের ৭২ লাখ ০৯ হাজার ২২২ টাকা।
অপরদিকে অনুসন্ধানকালে তার স্ত্রীর খন্দকার নুরুন নাহার লোটাসের নামে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৬৯ হাজার ২১০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৬৪ লাখ ৫৩ হাজার ৯০৬ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ তার নিজ নামে মোট ২ কোটি ৩৪ লাখ ২৩ হাজার ১১৬ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্যমতে তার পারিবারিক ব্যয় ও পরিশোধিত কর বাবদ ব্যয়সহ মোট ব্যয় পাওয়া যায় ১৭ লাখ ১৪ হাজার ২৩৭ টাকা। বর্তমানে তার দায় রয়েছে ৬৭ লাখ ৬৫ হাজার ২৮০ টাকা। অর্থাৎ ব্যয় ও দায় হিসেব করে তার অর্জিত মোট অর্থ-সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৮৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৩ টাকা। তার বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া যায় ৩৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকার। অর্থাৎ তার নামে অর্জিত সম্পদের মধ্যে বৈধ আয়ের উৎস নেই ১ কোটি ৪৮ লাখ ৯৮ হাজার ৭৩ টাকার। এ সম্পদটি অবৈধ।
উক্ত সম্পদসমূহ তার নিজের নামে অর্জিত মর্মে দেখানো হলেও মূলত সম্পদগুলো তার স্বামীর অর্থে ক্রয়কৃত ও অর্জিত। কারণ তিনি একজন গৃহিণী এবং তার নিজস্ব কোনো উপার্জন নেই। একজন গৃহিণী হলেও অসৎ উদ্দেশ্যে আয়কর নথিতে তাকে ব্যবসায়ী হিসেবে দেখান। তিনি ব্যবসার কোন কাগজপত্র, হিসাবের খাতাপত্র, মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের রেকর্ডপত্র ইত্যাদি কিছুই দেখাতে পারেননি । # কাশেম