দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে ৪৬ লাখ জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আসামিরা হলেন- মূলহোতা জীবন হোসেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ইমাম হোসেন ও পিয়াস করিম।
সোমবার (৩ মে) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় কামরাঙ্গীরচর থানায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী তাদের প্রত্যেকের দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে রোববার (২ মে) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের নোয়াগাঁও এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় জাল টাকা তৈরির মিনি কারখানার সন্ধান পায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশানের গোয়েন্দা বিভাগ। সেখান থেকে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দুইটি ল্যাপটপ, দুইটি প্রিন্টার, হিট মেশিন, বিভিন্ন ধরনের স্ক্রিন, ডাইস, জাল টাকার নিরাপত্তা সূতা, বিভিন্ন ধরনের কালি, আঠা এবং স্কেল কাটারসহ আরও অনেক সামগ্রী। যা দিয়ে আরও কম করে হলেও দেড় কোটি জাল টাকা তৈরি করা সম্ভব ছিল।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আসামি পিয়াস ও ইমাম হোসেন বরিশাল পলিটেকনিকেল থেকে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং ও কম্পিউটার সাইন্স বিষয়ে ডিপ্লোমা অর্জন করে। ইতোপূর্বে তারা গ্রামীনফোনে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। বেশি টাকা প্রাপ্তির লোভে তারা বৈধ চাকরি ছেড়ে জাল টাকা তৈরির অবৈধ কাজে যোগদান করেন।
এই দুই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারের তৈরি জাল টাকার কোয়ালিটি যথেষ্ট উন্নত ছিল বলে জানায় পুলিশ। আসন্ন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাকে লক্ষ্য করে জাল টাকা তৈরি করার বড় ধরনের পরিকল্পনা ছিল তাদের।
চক্রটি প্রথমদিকে সাভারের জ্ঞানদা এলাকায় জাল টাকা তৈরি করত। ঈদকে কেন্দ্র করে গত তিনমাস ধরে তারা কামরাঙ্গীরচরে জাল টাকা তৈরির ব্যবসা শুরু করে। চক্রটির দলনেতা জীবন। এর আগেও জাল টাকা তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তার একাধিকবার জেল হয়েছে। জেল থেকে বেরিয়ে আবার জাল টাকা বানানোর কাজ শুরু করে।
জীবনকে বেশ কিছুদিন ধরে পুলিশ অনুসরণ করছিল। অবশেষে ধরা পড়ে। এ ঘটনায় রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়।#