দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিস) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস কাউন্সিলরদের জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রত্যয় নিয়ে কাজ করতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, এবার নগরীতে কোথাও জলবদ্ধতা হতে দেব না।
বৃহস্পতিবার ( ২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত কর্পোরেশনের দ্বিতীয় পরিষদের ৬ষ্ঠ বোর্ড সভায় ডিএসসিসি মেয়র এই আহবান জানান।
মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন,’আগামী বর্ষা মৌসুমকে লক্ষ্য রেখে জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলসভাবে কাজ করছেন। সেক্ষেত্রে, আপনারা সজাগ থাকবেন। বর্ষায় বৃষ্টি হলে, যে ওয়ার্ডের যেই জায়গায় পানি জমবে, আপনারা সাথে সাথে আমাদেরকে জানাবেন। জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।’
ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন,করোনা মহামারীর মধ্যে ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণে প্রত্যয় নিয়ে কাজ করার ফলে সফলতা এসেছে। এবার ‘আমরা প্রত্যয় নিয়ে কাজ করলে ইনশাল্লাহ জলাবদ্ধতা নিরসন করতে পারব।’
ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস শীত মৌসুমে কিউলেক্স মশার উপদ্রব কিছুটা বাড়ে উল্লেখ করে বলেন, ‘ঢাকা শহরে এখনো এত বেশি ছোট ছোট বদ্ধ জলাশয় রয়েছে যেগুলো আমাদের নাগালের বাইরে, আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে সুতরাং সে সকল জায়গা থেকে মশক বৃদ্ধি পায়, বিস্তার লাভ করে, প্রজনন ছড়ায়।’
যখনই মশক নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কীটনাশকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পায়, সাথে সাথে তা পরীক্ষা করানো হয় জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস আরও বলেন, ‘আমরা এতবার পরীক্ষা করাই যে, সবাই অতিষ্ঠ হয়ে যায়। কিন্তু তারপরও যখনই অভিযোগ পাই তখনই আমরা পরীক্ষা করায়। তাই, আমাদের এই মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা – সেটা আপনাদেরকে তদারকি করতে হবে।’
ডিএসসিসি মেয়র আরও বলেন,মশার ওষুধ বা কীটনাশকের মান যেন ঠিক থাকে সেজন্য আমরা বারবার পরীক্ষা করাই। আর দীর্ঘদিন যদি কোন কীটনাশক বারবার ব্যবহার করা হয়, তখন তাতে মশক সহনশীল হয়ে যায়।
এছাড়াও, ডেঙ্গুর জন্য যে কীটনাশকের প্রয়োগে সুফল পাওয়া যায়, কিউলেক্স মশার জন্য তা কার্যকর হয় না। সেজন্য আমরা কীটনাশক পরিবর্তন করছি। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন কীটনাশক চলে আসবে। সেটা আমরা কিউলেক্স মশার জন্য ব্যবহার করব। সুতরাং কিউলেক্স মশার উপদ্রব বাড়ার যে অভিযোগ আসছে, সেটারও নিরসন হবে।
ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আমাদের রাজস্ব আহরণের মূল ক্ষেত্র হলো হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স। সুতরাং এই জায়গাতে আমাদের সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে। আমরা রাজস্ব আহরণ বাড়াতে ইতোমধ্যেই টাস্কফোর্স গঠন করে দিয়েছি। তাই, আপনাদের নেতৃত্বে কোন হোল্ডিং যাতে বাদ না পরে, কোন প্রতিষ্ঠান যাতে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত না হয়, সে বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।’
ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন অজুহাতে ট্রেড লাইসেন্স করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করে জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন,’অনেক সময় দেখা যায়, বিরোধপূর্ণ কোন স্থাপনায় কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হলে, বিরোধের অজুহাতে তারা ট্রেড লাইসেন্স করা থেকে বিরত থাকে। কিন্তু ট্রেড লাইসেন্সের সাথে জমি স্বত্বের কোন সম্পর্ক নাই। যে ব্যবসা করবে – ছোট হোক বড় হোক – তাকে ট্রেড লাইসেন্স করতেই হবে। বাণিজ্যিক অনুমোদন নিতে হবে।’
পরে বোর্ড সভার আলোচ্য সূচি অনুযায়ী ৯ সদস্যবিশিষ্ট ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং স্বাস্থ্যরক্ষা ব্যবস্থা” বিষয়ক স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস একে একে ৯ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটির সদস্যদের নাম প্রস্তাব করলে উপস্থিত সকলে একযোগে তা অনুমোদন করেন।
৪৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মকছুদ হোসেনকে সভাপতি করে গঠিত কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন সাধারণ আসনের ২ নং ওয়ার্ডের মোঃ আনিসুর রহমান, ৬২ নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ মোস্তাক আহমেদ, ৩১ নং ওয়ার্ডের শেখ মোহাম্মদ আলমগীর, ১৮ নং ওয়ার্ডের আ স ম ফেরদৌস আলম, ৭৫ নং ওয়ার্ডের মোঃ আকবর হোসেন এবং ৪ নং সংরক্ষিত আসনের ফারহানা ইসলাম ডলি, ৮ নং সংরক্ষিত আসনের নিলুফার রহমান ও ১৩ নং সংরক্ষিত আসনের শাহিনুর বেগম।
স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ৫০ নং ধারা অনুযায়ী উল্লিখিত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং স্বাস্থ্যরক্ষা ব্যবস্থা বিষয়ক স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। সভায় আলোচ্যসূচি অনুযায়ী অন্যান্য বিষয়েও আলোচনা হয়।
সভায় ডিএসসিসির কাউন্সিলরবৃন্দসহ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী রেজাউর রহমান, সচিব মো. আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মুনান হাওলাদার, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম, ডিএসসিসির বিভিন্ন বিভাগের দপ্তর প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।/ প্রেস বিজ্ঞপ্তি।