দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
করোনা পরিস্থিতি রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, গাজীপুর, নরসিংদী আর নারায়ণগঞ্জে পাইলটিং ভিত্তিতে লকডাউনের প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পল্টন, কলাবাগান, গেণ্ডারিয়া, সূত্রাপুর, গুলশান, রমনা, মতিঝিল, তেজগাঁও, শাহজাহানপুর এবং হাজারীবাগ—এই ১০ এলাকায় লকডাউনের ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রস্তাবনা রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক সূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে। ঝুঁকি বিবেচনায় ও কিছু প্যারামিটারের ভিত্তিতে সারাদেশকে রেড, ইয়েলো এবং গ্রিন জোনে ভাগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেছেন, লকডাউনের এলাকা চূড়ান্ত হচ্ছে । এ বিষয়ে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
এলাকা ভাগ করার ক্রাইটেরিয়াতে এক লাখ মানুষের মধ্যে ১৪ দিনে সেখানে নমুনা সংগ্রহ, নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে রোগী শনাক্ত এবং এই সময়ের মধ্যে রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার হার বিবেচনা করা হয়েছে।
জোনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে ঠিকই, এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এগুলো প্রযুক্তিভিত্তিক কাজ। শনাক্ত হওয়া রোগীর ভিত্তিতে কিছু প্যারামিটার ঠিক করা হয়েছে। সে হিসেবে এক লাখ মানুষের মধ্যে ১৪ দিনের মধ্যে তিন থেকে ২৯ জন রোগী হলে ইয়েলো জোন, ৩০-এর বেশি হলে রেড জোন এবং তিনজন রোগীর নিচে হলে সেটা গ্রিন জোন—এটা প্রস্তাব করা হয়েছে সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য।
একইসঙ্গে ঢাকার বাইরেও জেলা উপজেলার জন্য এক লাখ মানুষের মধ্যে ১৪ দিনের মধ্যে তিন থেকে নয় ইয়েলো, দশের বেশি হলে রেড এবং তিনজনের নিচে হলে গ্রিন—এটা হচ্ছে জোনাল হিসেবে ভাগ করার একটা প্রাথমিক প্রস্তাবনা।
এরসঙ্গে প্রস্তাবনা হিসেবে আরও যোগ হয়েছে ডাবলিং রেট-ডাবলিং টাইম অর্থাৎ ১৪ দিনে কোনও এলাকার রোগী সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে, রোগের গ্রাফিক্যাল ট্রেন্ড, নমুনা কত সংগ্রহ হচ্ছে এবং এসব নমুনার ভেতরে কত শতাংশ পজিটিভ অর্থাৎ সংগ্রহকৃত নমুনার মধ্যে কতজন করোনাতে আক্রান্ত হয়েছেন। এরকম আরও কিছু প্যারামিটার যোগ করে এলাকা ভাগ করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিশেষভাবে নজর রাখার কথা রয়েছে অধিদফতরের প্রস্তাবনায়।
তবে গণমাধ্যমে লকডাউন বলা হলেও সেখানে কী কী ব্যবস্থাপনা হবে, কোন পদ্ধতিতে কোন বিধি-নিষেধের আওতায় কোন এলাকা আসবে সেটা নির্ধারিত এলাকার জনপ্রতিনিধিরা ঠিক করবেন। কিন্তু বিটুইন দ্য জোন অর্থাৎ রেড জোন থেকে সবুজ বা সবুজ থেকে হলুদ এলাকায় মানুষের যাতায়াত কী হবে সেটা কেন্দ্রীয়ভাবে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
রেড জোন মানেই সম্পূর্ণভাবে এসব এলাকা লকডাউন করে দেওয়া নয়। এসব এলাকার ওয়ার্ড কমিশনার বা মেয়র যেভাবে এটা বাস্তবায়ন করলে সর্বোচ্চ সুবিধা পাবেন বলে মনে করবেন সেভাবেই তারা এটি বাস্তবায়ন করবেন। এজন্য সাপোর্টিং ম্যানেজমেন্ট যেমন খাবার, বাজার, ব্যাংকসহ প্রয়োজনীয় বিষয় মাথায় রেখে করতে হবে।
কতটুকু ইউনিটে কোন ম্যাজার নেবে সেটা স্থানীয় প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে করা কমিটি ঠিক করবেন। রেড জোন মানে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, কীভাবে নেওয়া হবে এগুলো ঠিক করার জন্য কমিটি গঠনের প্রস্তাবনাও রাখা হয়েছে।
‘লকডাউনের জোনে ভাগ করা মানেই লকডাউন নয়’ মন্তব্য করে একাধিক সূত্র বলেন, আমরা জোন ঠিক করে দেবো—সেখানে লকডাউন দেওয়া হবে নাকি অন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটা কমিটি ঠিক করবে। তবে এক জোন থেকে আরেক জোনে যাতায়াত কী হবে সে বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। #