দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
রাজধানীর হাতিরঝিল ঈদুল ফিতরের আগে অনেকটাই জনমানবশূন্য ছিল। তবে, ঈদের দিন শুক্রবার (১৪ মে) সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে হাতিরঝিলে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় বাড়তে থাকে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছেন হাতিরঝিলে।
হাতিরঝিল এলাকায় কেউ ওয়াটার ট্যাক্সিতে চড়ে, আবার কেউ ঝিলের ধারে গাছের ছায়ায় বসে শীতল বাতাসে উপভোগ করছেন ঈদের আনন্দ। গল্প, আড্ডা আর ঝিলের ধারে ঘুরে বেড়াতেও দেখা গেছে অনেককে।
ঈদ উদযাপনে রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলো এবার দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়নি। করোনা মহামারির বিস্তার রোধে কর্তৃপক্ষ অনেক আগ থেকেই এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আর পরিবার-পরিজনের সঙ্গে বাসায় ঈদের আনন্দ পালনের আহ্বান জানিয়েছে সরকার।হাতিরঝিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিকেল ৪টার পর থেকেই স্রোতের মতো মানুষ আসতে থাকেন। তখনো পশ্চিম আকাশে রোদ পুরোপুরি পড়েনি। সূর্যের প্রখর তাপ লক্ষ্য করার মতো। কিন্তু, বিনোদনপ্রেমী মানুষ ছুটে আসছেন হাতিরঝিলে। সন্ধ্যার পরও আসেন অনেক মানুষ।
রাজধানীর অন্যান্য বিনোদনকেন্দ্র সেভাবে খোলা না থাকায় গরম ও মানুষের ভিড় ওপেক্ষা করে তারা এখানে এসেছেন একটু সস্থির জন্য।
লোকজন বলেন, অনেকদিন ধরে ছেলে-মেয়েরা বায়না ধরেছে ওয়াটার ট্যাক্সিতে ঘুরবে। ঈদেরদিন বিকেলে বাসা থেকে বের হতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু ওরা কোনোমতেই ছাড়ছে না বলে দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে ওয়াটার ট্যাক্সির রামপুরা কাউন্টারে আসলাম। দেখি একটু আনন্দ পাওয়া যায় কিনা।’
পরিবার-পরিজন নিয়ে উত্তরা থেকে হাতিরঝিলে এসেছেন খলিলুর রহমান। খোলা বাতাসে বসে ঝিলের ধারে ঘাসের ওপর বসে উপভোগ করছিলেন দর্শনার্থীদের পদচারণা ও ঝিলের সৌন্দর্য।
‘লকডাউনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া আর নিজের ব্যস্ততার জন্য গ্রামের বাড়ি যেতে পারিনি। তাই ঢাকাতেই ঈদ করতে হলো। এখন ব্যস্ততার কারণে স্ত্রী আর ছেলে-মেয়েকে তেমন সময়ও দিতে পারি না। তাই ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে এসেছি।’
এফডিসি থেকে পুুলিশ প্লাজা, গুলশান গুদারাঘাট, মেরুল বাড্ডা, রামপুরা পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করতে ৩০ মিনিট সময় লাগবে। প্রতিটি টিকিটের মূল্য আলাদা আলাদা।
ওয়াটার ট্যাক্সির ম্যানেজার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সবকটি ট্যাক্সি চলাচল করে। আজ ঈদেরদিন ব্যাপক মানুষের সমাগম হয়েছে। ঈদ মৌসুমে আগামী কয়েকদিন বিনোদনপ্রেমীদের জন্য ঝিল উৎসবমুখর থাকবে।’
বর্তমানে কতটি ওয়াটার ট্যাক্সি চলছে তা জানাতে না পারলেও তিনি বলেন, ‘এক একটির যাত্রী ধারণক্ষমতা ৪৫ জন। টার্মিনাল আছে ৫টি-এফডিসি, পুলিশ প্লাজা, গুলশান মেরুল-বাড্ডা এবং রামপুরা। এ ছাড়াও চক্রাকার বাস রয়েছে।’
হাতিরঝিলের আকর্ষণ :
খোলা আকাশের নিচে মনোরম পরিবেশে হাতিরঝিলে আলোর সঙ্গে পানির ফোয়ারা। মিউজিকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচতে থাকে এসব ফোয়ারা।
এটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় মিউজিক্যাল ড্যান্সিং ফাউন্টেইন। এর ফোয়ারার পানি ১০ মিটার থেকে ৭০ মিটার পর্যন্ত ওপরে উঠে। মিউজিক্যাল ড্যান্সিং ফাউন্টেইন এবং অ্যাম্পিথিয়েটারের বাড়তি বিনোদন উপভোগ করার সুযোগ মিলেছে ঈদ উৎসবে। ফোয়ারা চালু থাকে ১৫ মিনিটের মতো। এটি উপভোগ করতে চাইলে সময়মতো আসতে হবে। কারণ এসব ফোয়ারা নির্দিষ্ট সময়ে ছাড়া হয়।
হাতিরঝিলের আশপাশের গুলশান, পুলিশ প্লাজা, মেরুল বাড্ডা, মধুবাগ ও মহানগর প্রজেক্ট এলাকা থেকে ১ হাজার ৯৮০ বর্গমিটারের এই রঙিন ফোয়ারা। হাতিরঝিলের গুলশান আড়ং ও পুলিশ প্লাজার মাঝামাঝি অংশে গোলাকার উন্মুক্ত মঞ্চ অ্যাম্পিথিয়েটার থেকেও তা উপভোগ করা যায়। #