দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
কাশ্মির ইস্যুতে পাকিস্তানের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের যৌথ অধিবেশনে দেয়া ভাষণে এরদোগান এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এই নিয়ে তিনি চারবার পাকিস্তানের সংসদে ভাষণ দিলেন।
এরদোগান বলেন, কয়েকশ বছর আগে তুরস্কের কানাকালেতে যে ধরনের হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল একই ঘটনা ঘটছে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে। এর বিরুদ্ধে তুরস্ক সবসময় প্রতিবাদ করে যাবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা কখনো কানাকালের সেই দুঃসময়ে উপমহাদেশের মুসলমানদের সমর্থনের কথা ভুলবো না।’ এ সময় এরদোগান মহাকবি আল্লামা ইকবালের একটি কবিতার পংক্তি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘যে পাকিস্তানিরা আমাদের জন্য এত সমর্থন দিয়েছেন, দোয়া করেছেন আমরা তাদেরকে কিভাবে ভুলে যাব? আমাদের বন্ধুত্ব ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে নয় বরং এর ভিত্তি হলো ভালোবাসা।’
এরদোগান বলেন, ‘আজকে কাশ্মির ইস্যুকে পাকিস্তানিরা যেভাবে দেখছেন আমরাও ঠিক একইভাবে দেখছি। আমরা অতীতের মতো ভবিষ্যতেও পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়ে যাব।’
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, পাকিস্তান এখন শান্তি এবং স্থিতিশীলতার পথে রয়েছে। তবে, এই শান্তি ও স্থিতিশীলতা খুব সহজে আসে না; এজন্য অনেক কাজ করতে হয়। পাকিস্তান নিশ্চয়ই সন্ত্রাসবাদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে স্থিতিশীল হবে। সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ে পাকিস্তানকে সমর্থন দেবেন বলেও তিনি ঘোষণা দেন।
পাকিস্তান সংসদে দেয়া ভাষণে এরদোগান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত শান্তি পরিকল্পনাকে দখলদারিত্বের পরিকল্পনা বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘ঈমানদারদের মনে কোনো দেয়াল তুলে দূরত্ব সৃষ্টি করা যায় না। বিশ্বের কোথাও কোনো মুসলমান নিপীড়িত হলে তাদের সাহায্য করা আমাদের দায়িত্ব।
বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পবিত্র আল-কুদস দখলের জন্য যে পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন সে ব্যাপারে আমাদের সাহায্যের হাত বাড়ানো উচিত।’
এরদোগান বলেন, ট্রাম্প ঘোষিত কথিত ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি কোনো শান্তির পরিকল্পনা নয় বরং প্রকৃতপক্ষে এটি একটি দখলদারিত্বের প্রকল্প। এ সময় তিনি জেরুজালেম বা আল-কুদস শহরকে মুসলমানদের জন্য রেডলাইন বলে ঘোষণা করেন।
এরদোগান বলেন, ‘আমরা সারা বিশ্বের সামনে ঘোষণা দিতে চাই যে, পবিত্র মসজিদুল আকসাকে ইসরাইলি প্রশাসনের করুণার ওপর আমরা ছেড়ে দিতে পারি না।’
কাশ্মির প্রসঙ্গে এরদোগান আরো বলেন, ‘কাশ্মিরে আমাদের ভাই-বোনেরা কয়েক দশক ধরে চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে একতরফা পদক্ষেপের কারণে সে দুর্ভোগ অনেক বেড়েছে।
কাশ্মির সমস্যার সমাধান হতে হবে সহিংসতা অথবা নির্যাতনের মাধ্যমে নয় বরং ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে। এ ধরনের সমাধান সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করবে।’
তিনি বলেন, কাশ্মির ইস্যুতে সবসময় ন্যায়বিচার, শান্তি ও সংলাপের পক্ষে থাকবে তুরস্কের অবস্থান।
গতকাল এরদোগান দুদিনের সফরে পাকিস্তান পৌঁছান এবং এরইমধ্যে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভিসহ শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে বৈঠক করেছেন। খবর পার্সটুডে। #