বিশেষ প্রতিবেদক, দূরবীণ নিউজ:
গত ১৪ দিনেও উদঘাটিত হয়নি রাজশাহীর দামকুড়া থানার টেংরামারী গ্রামের সরল মনা নিরীহ গৃহবধু মোসা. সুফিয়া বেগম (৪৫) নি:সংশ খুনের আসল রহস্য। পবিত্র রমজান মাসে গত ১৯ মে দিবাগত রাতে অত্যন্ত পরিকল্পিত ভাবে ঠান্ডা মাথায় সংঘবদ্ধ অপরাধীরা নির্মমভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গৃহবধু মোসা. সুফিয়া বেগমকে জবাই করে পালিয়ে যায়।
জানা যায়, রাজশাহী মহনগরীর দামকুড়া থানার, টেংরামারী গ্রামে নিজ বাড়িতে খুনের শিকার হয়েছেন গৃহবধু সুফিয়া বেগম। এই ঘটনায় পরদিন ২০ মে নিহতের স্বামী মো. আনিসুর রহমান (৫৫) বাদী হয়ে রাজশাহীর দামকুড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর- ৯, ধারা ৩০২ , পেনাল কোড-১৮৬০, তারিখ- ২০/০৫/২০২০।
বাদী মো. আনিসুর রহমান মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, রাজশাহীর দামকুড়া থানার, টেংরামারী গ্রামে নিজ বাড়িতে চার ছেলে ও স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করে আসছেন। গত ১৯ মে রাতে তিনি বাড়ির পাশে মসজিদে এশা ও তারাবিহ নামাজ পড়তে যান। মসজিদে যাবার আগে তার বাড়িতে বাদীর স্ত্রী মোসা. সুফিয়া বেগম, মেজো ছেলে মো. সাদিকুর রহমান (২৪) এবং পাশের বাড়ির প্রতিবেশি মোসা. সাথি খাতুন (২৮) ও সাথি খাতুনের ছেলে মো. জাহিদকে (৮) দেখে যান। এর কিছুক্ষণ পর তার মেজো ছেলে মো. সাদিকুর রহমানও মসজিদে নামাজ পড়তে চলে যান।
তিনি মসজিদে নামাজ আদায় শেষে রাত সোয়া ৯ টায় বাসায় ফিরে আসেন। বাসায় ফিরে তিনি স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে খুঁজতে থাকেন এবং ডাকা ডাকি করতে থাকেন। কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে, তিনি বাড়ির দক্ষিণে টিনের শয়ন কক্ষের দিকে এগিয়ে যান এবং দেখেন ঘরের লাইট বন্ধ। তিনি ওই টিনের ঘরে ঢুকে লাইট জ্বালান, সাথে সাথে দেখতে পান কাঠের চৌকির ওপর তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমের রক্তাক্ত মৃত দেহ পড়ে রয়েছে। তার স্ত্রীর গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করার চিহ্ন এবং পুরো শরীর রক্তাক্ত দেখতে পান।
পরে বাদী মো. আনিসুর রহমান দৌড়ে পাশের মসজিদে ছুটে যান এবং তার মেজো, সেজো ও ছোট ছেলেকে ডেকে এই খুনের ঘটনাটি জানান। এরপর তিনি মোবাইলে রাজশাহী মহনগরীর দামকুড়া থানা পুলিশকে তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমের নি:সংশ খুনের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
বাদী আরজিতে আরো উল্লেখ করেন, তার প্রতিবেশি ১. মো. স্মরন আলী (৩২), পিতা- মো. আনারুল হক; ২. মোসা: সাথি খাতুন (২৮), স্বামী- মো. মিলন এবং আরো অজ্ঞাত নামা আসামিরা গত ১৯ মে রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টা থেকে রাত সোয়া ৯ টার মধ্যে পরিকল্পিতভাবে স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে বাসায় একা পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করেছে।
বাদীর সন্দেহ হচ্ছে, প্রতিবেশিদের সাথে আগে থেকেই চলে আসা পারিবারিক কলহ এবং জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের কারণেই হয়তবা এই খুনের ঘটনাটি ঘটেছে। আর ওই বিরোধের জের ধরেই বাসায় একা পেয়ে পরিকল্পিতভাবে খুন করে অপরাধীরা।
এই মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে, ১. মো. কামাল উদ্দিন (৩৫), পিতা- মো. মাহাতাব উদ্দিন; ২. মো. আরিফুল ইসলাম কাজল (৪২), পিতা- মৃত. নজর আলী; ৩. মো. মামুনুর রশিদ (৪২ ), পিতা- মৃত আজিজুল হক; ৪. মো. সাদিকুর রহমান (২৪), পিতা- মো. আনিসুর রহমান। সবার ঠিকানা দামকুড়া থানার ,টেংরামারী গ্রামে।
কিন্তু এতাদিন পরও পুলিশ এই খুনের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা কিংবা প্রকৃত আসামিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে পারেনি বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবারের সদস্যরা। তারা এই মামলার ভবিষ্যৎ নিয়েও নানা উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন পুলিশ কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এই অসহায় পরিবারের সদস্যরা। # কাশেম
থানার বক্তব্য দিলে নিউ্জের গুরুত্ব বাড়তো।
দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি, নাহলে আইন শৃঙ্খলার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার সংকট সৃষ্টি হবে এবং বিচারহীনতার কারণে খুনিরা হয়ত আরও কোন নিরীহ মানুষের প্রাণ নাশের কারণ হবে।