দূরবীন নিউজ প্রতিবেদক :
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দুর্নীতি অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
রোববার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে “ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ফর প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যান্ড কমব্যাটিং ফিন্যান্সিং অব টেরিরিজম-২০১৯-২০২১” শীর্ষক আলোচনা সভায় দুদক চেয়ারম্যান এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত ঝুঁকি শনাক্তকরণের জন্য দুদক বিএফআইইউ ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-এর সহযোগিতায় তিনবার ন্যাশনাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট সম্পন্ন করেছে। এই অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে দুর্নীতিকেই মানিলন্ডারিংয়ের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থপাচার এবং অবৈধ অর্থের প্রবাহই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৬ সাল থেকে কমিশন ১৬৫টি ব্যাংক হিসাবে ২০১.৭৭ মিলিয়ন টাকা (২০.১৮ কোটি) জব্দ করেছে। একই সময়ে ২১টি ভবন/বাড়ি, ২৪টি ফ্ল্যাট, ৭৭ একর জমি, ৫টি বিলাসবহুল গাড়িও ক্রোক করা হয়েছে। এছাড়াও দুদকের মানিলন্ডারিং মামলায় ২০১৩ থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত আদালতের আদেশে বাজেয়াপ্তকৃত ৫,৮৪৫.৯৫ মিলিয়ন (৫৮৪.৪৬ কোটি) টাকা মূল্যের সম্পদ পুনরুদ্ধার করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, মিউচুয়াল লিগ্যাল রিকয়েস্ট অ্যাসিসটেন্সের মাধ্যমে দুটি মানি লন্ডারিং মামলায় ১৬ মিলিয়ন হংকং ডলার এবং ০.৮০ মিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড যথাক্রমে হংকং ও বৃটেনে জব্দ করা হয়েছে। এই অর্থ পুনরুদ্ধারে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এর আগেও ২.০৬মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার এবং ০.৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুনরুদ্ধার করে দেশে আনা হয়েছে।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, বিএফআইইউ কখনও কখনও একই রিপোর্ট একাধিক এজেন্সিকে দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে একই অভিযোগ একাধিক সংস্থা তদন্ত করলে ভুল বোঝাবুঝির যেমন সৃষ্টি হতে পারে তেমনি সময় ও কর্মঘণ্টার অপচয়ও হয়। ফলে সার্বিকভাবে মানিলন্ডারিং বিরোধী তৎপরতা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে।
তিনি বলেন, দুদক বিশ্বাস করে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং হয় বাণিজ্য কার্য প্রক্রিয়ায় ট্রেড বেইজড মানিলন্ডারিং)। গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটিসহ বিভিন্ন সংস্থার বৈশি^ক সূচকে দেখা যায়, প্রায় শতকরা আশিভাগ মান্ডিলন্ডারিং হয় বাণিজ্য কর্ম প্রক্রিয়ায়। এ কারণে দুদক যৌথ একাধিক সংস্থার সমন্বয়ে তদন্তকে স্বাগত জানায়।
দুদক চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ফিনিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট( বিএফআইইউ) এর সংস্কার প্রস্তাব করে বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি আরো কার্যকর হবে যদি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংস্থার কিছু কর্মকর্তাকে এই কর্ম প্রয়াসে সম্পৃক্ত করা হয় ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেন দুর্নীতি , সন্ত্রাস ও মানিলন্ডারিং জাতির এক নম্বর শত্রু । ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সোনালী ভবিষ্যতের জন্য এস্ব প্রতিরোধ করতে হবে।
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, বিশেষ অতিথি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং মডারেটর ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ফজলে কবির প্রমুখ। #