দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
দুর্নীতি দমন কমিশনের(দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দেশের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রক্রিয়া পুনর্মূল্যায়ন করার সময় এসেছে। দুদক ই-গভার্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ইজিপি) সংক্রান্ত দুর্নীতি তদন্ত করছে।
তিনি বলেন, ইজিপি প্রক্রিয়াকে কতিপয় ব্যক্তি ম্যানুপুলেট (বিকৃত) করে সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়াকেই বিতর্কিত করছে। অপরাধীরা সুকৌশলে ইজিপি প্রক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে অপরাধ করছে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস অন ড্রাগস এন্ড ক্রাইমের একটি প্রতিনিধি দল সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে ইকবাল মাহমুদের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনাকালে এসব বিষয় চলে আসে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুদকের প্রশিক্ষণ ও আইসিটি অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল ।
চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, কতিপয় অপরাধীদের কারণেই একই ঠিকাদর অধিকাংশ সরকারি কাজ পাচ্ছে। ইতোমধ্যেই ই-জিপি প্রক্রিয়ায় এ জাতীয় দুর্নীতির সাথে জড়িত বেশ কিছু সরকারি কর্মকর্তা ও ঠিকাদার গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তাদের জ্ঞিাসাবাদেও বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
তাই পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রক্রিয়ায় দেশের স্বার্থেই এর ফাঁক-ফোঁকড় বন্ধ করা সমীচীন। এক্ষেত্রে ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস অন ড্রাগস এন্ড ক্রাইম এর সহযোগিতা চেয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এসব নীতিমালা প্রণয়নে আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চাসমূহকে কিভাবে সংযোজন করা যায়, যাতে পদ্ধতিগতভাবেই দুর্নীতির সুযোগ রুদ্ধ হয়ে যায় – এ বিষয়ে আপনারাও জ্ঞানভিত্তিক সহযোগিতা করতে পারেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৬ সালে আমরা কমিশনের দায়িত্ব নিয়েই জার্মান উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জিআইজেড-এর সহযোগিতায় দেশের বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ, গণমাধ্যম, শিক্ষক-সিভিল সোসাইটি, সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগীসংস্থাসহ সকলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পাঁচ বছর মেয়াদি একটি কর্মকৌশল প্রণয়ন করি (২০১৭-২০২১) । ২০২১ সালেই এ কর্মপরিকল্পনার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।
তাই আগামী বছরেই কমিশনের নতুন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। এক্ষেত্রে ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস অন ড্রাগস এন্ড ক্রাইম-এর সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন দুর্নীতি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সৃজনশীল এবং অর্ন্তভুক্তিমূলক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন এই লক্ষ্যমাত্রার ১৬ নং লক্ষ্য অনুসারে সমাজের সর্বস্তরে কার্যকর , জবাবদিহিমূলক ও অর্ন্তভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, শুধু তাই নয় এই লক্ষ্যমাত্রার ৪ নং লক্ষ্য বাস্তবায়নে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণের জন্য শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতিবিরোধী নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
শিক্ষাক্ষেত্রে পদ্ধতিগত সংস্কারে যেমন কমিশন ভূমিকা রাখছে, তেমনি দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে মামলা করা হচ্ছে , আসামিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে আবার প্রায় প্রতিনিয়তই প্রতিরোধমূলক অভিযানও পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি প্রতিনিধি দলটির উদ্দেশ্যে আরো বলেন, কমিশনের কর্মকর্তাদের তদন্ত কর্মকৌশল, জিজ্ঞাসাবাদ টেকনিকসহ সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আপনাদের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে।
আপনাদের সৃজনশীল এবং বিশ্বব্যাপী অনুসৃত কৌশলসমূহ আমাদের দেশের অপরধীদের নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে।
ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস অন ড্রাগস এন্ড ক্রাইম এর প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট অফিসার উধহরষড় জরুুর (ড্যানিলো রিজ্জি) বলেন, ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস অন ড্রাগস এন্ড ক্রাইম একটি জ্ঞানভিত্তিক অফিস। এর বিশাল জ্ঞান ভান্ডার রয়েছে।
এর মাধ্যমে কমিশনকে সহযোগিতা করা হচ্ছে । আজকে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তা অত্যন্ত উৎসাহব্যাঞ্জক। ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস অন ড্রাগস এন্ড ক্রাইম (ইউএনও-ডিসি) ও দুদক পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এসব ইস্যুতে কাজ করতে পারে। # কাশেম