দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের কাছে আটকে থাকা গ্রাহকের টাকা বিদেশে পাচারের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কোনো বক্তব্য শুনতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। কারণ প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের বিষয়ে দুদকের বক্তব্য কি। ফলে রিটকারী আইনজীবীকে বিষয়টি নোটিশ আকারে দুদকের সংশ্লিষ্টদের জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে করা রিট আবেদনের ওপর আদেশের জন্য ৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বুধবার (৬ এপ্রিল) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বে এ আদেশ দেন। গণমাধ্যমকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম।
রিটে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), বাংলাদেশ ব্যাংক, ই-অরেঞ্জের সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজা বিন ও বীথি আক্তারসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম। অন্যদিকে রাণ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
রিট আবেদনে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ গ্রাহকের টাকা বিদেশে পাচার করেছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে দুদককে কোনো নোটিশ করা হয়েছিল কি না, আদালত তা জানতে চাইলে রিটকারী আইনজীবী জানান, আমরা দুদক ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে আবেদন করেছি। এরপর বিদেশে গ্রাহকের অর্থ পাচার নিয়ে আদালতে উপস্থাপন করা অভিযোগের একটি কপি দুদককে দিতে নির্দেশ দেন আদালত।
এ বিষয়ে দুদকের কোনো বক্তব্য থাকালে তা ৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) আদালতে উপস্থাপন করবেন। ই-অরেঞ্জ গ্রাহকের কাছে আটকে থাকা ৭৭ কোটি টাকা ফেরত চেয়ে পাঁচ শতাধিক গ্রাহকের করা রিটের শুনানি গত মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য বুধবার (৬ এপ্রিল) দিন ধার্য ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আজ (বুধবার) দুদককে অভিযোগের লিখিত কপি দেওয়ার আদেশ দেন আদালত।
এ বিষয়ে এম আব্দুল কাইয়ুম গণমাধ্যমকে বলেন, ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করা অনলাইন শপ ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গত বছরের মাঝামাঝি থেকে গ্রাহকদের টাকা নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ ওঠে। প্রতিষ্ঠার মাত্র দু-এক বছরের মধ্যে গ্রাহক আকর্ষণে বিভিন্ন অনৈতিক অফার, ডিসকাউন্টের নামে তাদের কাছ থেকে প্রায় ৭৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় ই-অরেঞ্জ। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, কোম্পানিটি বিপুল অর্থ এরই মধ্যে বিদেশে পাচারও করেছে।
রিটে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি ই-ওয়ালেট, গিফট কার্ডসহ অন্যান্য অননুমোদিত পদ্ধতিতে লেনদেন করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে গ্রাহকদের সর্বস্বান্ত করেছে। সরকারি দপ্তরগুলোর নাকের ডগায় থেকে প্রতিনিয়ত দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করেছে কোম্পানিটি। কিন্তু এসবের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
অর্ডারের টাকা নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করে গ্রাহকদের ১১শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের মামলায় ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান এখন কারাগারে। #