দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহি বিমান ভূপাতিত করার বিষয়টি স্বীকার করেছে ইরানের সামরিক বাহিনী । তারা ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটিকে ভূপাতিত কররা বিষয়ে তারা জানিয়েছেন এটা অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়। খবর বিবিসি বাংলার।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের একটি স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ সাইটের কাছাকাছি যাত্রীবাহী বিমানটি চলে আসলে ‘মানব ত্রুটি’র কারণে বিমানটি ভূপাতিত হয়। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এ ঘটনায় জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) এক টুইটে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের হঠকারিতা” ইউক্রেনীয় জেটটি ভূ-পাতিত হওয়ার জন্য আংশিকভাবে দায়ী।
এর আগে ইরান অস্বীকার করে যে, দেশটির একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটি বুধবার রাজধানী তেহরানের কাছে বিধ্বস্ত হয়।
কিন্তু ইরান হয়তো ভুল করে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটি ভূ-পাতিত করেছে- যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এমন দাবি তোলার পর থেকে ইরানের উপর চাপ বাড়তে থাকে।
ইরাকে মার্কিন দুটি বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইরান হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা পরই ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট পিএস৭৫২ বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৭৬ আরোহীর সবাই মারা যায়।
ইউক্রেনের ওই ফ্লাইটটি ইউক্রেনীয় রাজধানী কিয়েভ হয়ে কানাডার টরেন্টোর দিকে যাচ্ছিল, কিন্তু উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই ইমাম খোমেনি বিমানবন্দরের কাছে আছড়ে পরে এটি।
মার্কিন গণমাধ্যমে বলা হয় যে, ইরান যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল তাই তারা হয়তো ইউক্রেনীয় এয়ারলাইন্সের বিমানটিকে যুদ্ধ বিমান ভেবে ভুল করেছে।
গত ৩ জানুয়ারি ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেইমানি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে আকাশ পথে হামলা চালায় ইরান।
প্রমাণাদি যেহেতু ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ধারণাকেই জোড়ালো করছে, তাই ইরান বলেছে যে তারা এর পূর্ণ তদন্ত করবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার, টেলিভিশনের দেখানো বিমান বিধ্বস্তের ছবিতে দেখা যায় যে, ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ নষ্ট করা হয়েছে।
শুক্রবার কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া ফিলিপ শ্যাম্পেন ইরানকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘বিশ্ব নজর রেখেছে,’ এবং বিমানে থাকা নিহত আরোহীদের স্বজনেরা “সত্য জানতে চায়’।
এর আগে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বলেন যে, একাধিক সূত্র থেকে তিনি যেসব গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছেন তা এটাই নির্দেশ করে যে, ইরানের ভূমি-থেকে-আকাশে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভূপাতিত হয়েছে বিমানটি।
মিস্টার ট্রুডোর এমন মন্তব্যের পরেই এই হুঁশিয়ারি দিলেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
নিউইয়র্ক টাইমসের পাওয়া ভিডিওতে দেখা যায় যে, তেহরানের রাতের আকাশে একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ঝলকানি দেখা যাচ্ছে এবং একটি বিমানের সংস্পর্শে আসার পর সেটি বিস্ফোরিত হচ্ছে। এর ১০ সেকেন্ড পর বিস্ফোরণের বিকট শব্দ মাটি থেকে শোনা যায়। আর আগুন ধরে যাওয়া বিমানটি উড়তে থাকে। #