বিশেষ প্রতিনিধি, দূরবীণ নিউজ :
গণটিকার কর্মসূচি সরকারের আরেকটি তামাশা বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ সোমবার (১৬ আগস্ট) নয়া পল্টনে অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৭৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার আরোগ্য, দীর্ঘায়ু ও মুক্তি কামনায় এবং সারাদেশে করোনাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের আত্মার মাগফেরাতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই দোয়া মাহফিল হয়।
তিনি বলেন, “ আাপনারা দেখুন এতো বড় একটা বৈশ্বিক মহামারী যেটাও তারা(সরকার) সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সেই টিকা সংগ্রহ করতে গিয়ে দুর্নীতি করেছে। তারা গণটিকা প্রদানের নামে আরেকটি তামাশা জনগনের সামনে উপস্থিত করেছে।”
“ যার ফলে কী হয়েছে? সমগ্র দেশে করোনাভাইরাসের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।”বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ লকডাউনের নামে …প্রকৃত পক্ষে তারা এ সময়টা বিরোধী দলের ওপরে ক্র্যাকডাউন করেছে।
তারা কোনো সভা-সমিতি, কোনো জমায়েত করতে দিচ্ছে না।”“নিজেরা কিন্ত ঠিকই সব করে যাচ্ছে।”’অপপ্রচারে জনগনকে বিভ্রান্ত করা যাবে না’মির্জা ফখরুল বলেন, “ এই সরকার ইতিহাসকে বিকৃত করবার জন্যে এবং জনগনের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করবার জন্যে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অত্যন্ত অপমানজনক কথা-বার্তা বলছে। এই কথা-বার্তাগুলো বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে ইতিহাসকে বিকৃত করা এবং জনগনকে বিভ্রান্ত করা।
“ আমরা খু্ব ভালো করেই জানি যখন ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড ঘটে সেই হত্যাকান্ডের পরে কারা ক্ষমতায় এসেছিল্। ক্ষমতায় এসেছিলো আওয়ামী লীগ, তাদেরই নেতা খোন্দকার মোশতাক আহমেদ সেদিন ক্ষমতাসীন হয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়েই নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছিলো শেখ মুজিবুর রহমানের রক্তের উপর দিয়ে হেটে গিয়ে- এই কথা আমরা ভুলে যাইনি। তাদেরই সেনা প্রধান সেদিন ছিলো শফিউল্লাহ। তাকে তারা পরবর্তিকালে এমপি বানিয়েছেন এবং সেই সময়ের যারা কুশীলব ছিলেন তাদের প্রত্যেককেই তারা এখন মর্যাদার সঙ্গে তাদের সরকারে অবস্থান দিয়েছেন।”
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “ সেদিন যারা ১৫ আগস্টে তার(শেখ মুজিবুর রহমান) হত্যার পরে বিভিন্নভাবে সেই ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে আতাঁত করেছিলো এবং তাদেরকে সাহায্য করেছিলো সেই কর্ণেল তাহেরের নাম কিন্তু তারা একবারও উচ্চারণ করে না। কর্ণেল তাহের সেদিন নারায়নগঞ্জ থেকে রেডিও সেন্টারে এসেছিলেন এবং তারপরের দিন বঙ্গভবনে মিটিংও করেছেন। তাদের কথা তারা বলে না। তারা তৎকালীন জাসদের গণবাহিনীর নেতা হাসানুল হক ইনুর কথা একবারও বলেনা তারা। বরং তাকে তারা মন্ত্রী বানিয়েছে। ৭৫ সালে সামরিক আইন জারি করেছিলেন খোন্দকার মোশতাক। এই কথা জনগনের কাছে তারা কখনো বলে না।”
ফখরুল বলেন, “ যে ব্যক্তিটি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, যিনি বাংলাদেশকে পূনর্জন্ম দি্য়েছিলেন, যিনি বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত করবার জন্য একটা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন, যিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সেই মানুষের বিরুদ্ধে আজকে তারা কুৎসা রটনা করছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই মিথ্যা প্রচারনা কোনোটাই জনগনকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না এবং সত্য ইতিহাস বেরিয়ে আসবে।”গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য সকলকে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান তিনি।
কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে দলের স্থায়ী কমিটির গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান ও আবদুস সালাম বক্তব্য রাখেন।উপস্থিত ছিলেন বিএনপির হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শিরিন সুলতানা, মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, শামীমুর রহমান শামীম,তাইফুল ইসলাম টিপু,মনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, আমিরুজ্জামান শিমুল, জেডএম মূর্তজা চৌধুরী তুলা, বিলকিস ইসলাম, রফিক শিকদার, হায়দার আলী লেলিন, ফরিদা ইয়াসমীন, হাসান জাফির তুহিন, মশিউর রহমান বিপ্লব, মহানগরের আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, এসএম জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, উলামা দলের মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদার, মৎস্যজীবী দলে আবদুর রহিম, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমূখরা উপস্থিত ছিলেন।
এডিজেড/একে/দূরবীণ নিউজ ।