দূরবীন নিউজ প্রতিবেদক:
ইতিহাসের জগন্যতম হত্যাকান্ডে শিকার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎকৌশল বিভাগের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ। আর এই জগন্য হত্যাকান্ডের ঘটনায় উত্তাল গোটা বুয়েট ক্যাম্পাস।
কিন্তু এখনো বুয়েট উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামের কোনো দেখা নেই। মেধাবী ছাত্র আবরারকে পিটিয়ে হত্যার দুই দিনেও ।এদিকে রাজধানীসহ সারাদেশেই আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে চলছে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ। তবে আবরারের মরদেহ দেখার জন্য একবারের জন্যও আসেননি বুয়েট ক্যাম্পাসে কিংবা ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গে। আবরারের মরদেহ মর্গ থেকে এনে বুয়েট ক্যাম্পাসে জানাজা অনুষ্ঠিত হলেও সেখানেও উপস্থিত ছিলেন না উপাচার্য।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বুয়েট শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। সেখানে তারা আলটিমেটাম দিয়েছেন, বিকেল ৫টার মধ্যে উপাচার্য ক্যাম্পাসে এসে তাদের সঙ্গে দেখা না করলে তারা আগামীকাল বুধবার (৯ অক্টোবর) থেকে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেবেন। তবে আববার হত্যা মামলায় গ্রেফতার ১০ আসামি পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ।
রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা আবরারকে তার শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুম থেকে ডেকে নেন। বুয়েট শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওই হলেরই ২০১১ নম্বর রুমে নিয়ে আবরারকে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেন, পেটান। বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেতাও আবরারকে জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য স্বীকার করেছেন। পরে সোমবার (৭ অক্টোবর) ভোর ৪টার দিকে আবরারের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয় হলের সিঁড়ি থেকে।
পরে আবরারের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ঢামেক মর্গে। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মরদেহ আনা হয় বুয়েট ক্যাম্পাসে। সেখানে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে রাত পৌনে ১০টার দিকে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে একবারের জন্যও ক্যাম্পাসে আসেননি উপাচার্য ড. সাইফুল।
এমন একটি ঘটনায় যখন সারাদেশ উত্তাল, তখন গণমাধ্যমকর্মীরাও উপাচার্য ড. সাইফুলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সোমবার বিভিন্ন সময় এই প্রতিবেদকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা উপাচার্যের মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। মঙ্গলবার সকাল থেকেও একাধিকবার তার মোবাইল নম্বরে কল করা হয়। কখনো সেই নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে, কখনো কল ঢুকলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বুয়েট উপাচার্যের খোঁজ নিতে যাওয়া হয় তার কার্যালয়ে। সেখানকার নিরাপত্তা প্রহরী জানান, পূজার ছুটি থাকায় স্যার (উপাচার্য) গত দুই দিন ক্যাম্পাসে আসেননি। উপাচার্যের কার্যালয়ের পাশের ভবনের আরেক নিরাপত্তা প্রহরী জানান, গত দুই দিন ধরে তিনি উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে দেখেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তার জন্য বরাদ্দ বাসভবনেও অবস্থান করছেন না। নিরাপত্তা প্রহরীদের কেউ কেউ জানান, ভিসি বর্তমানে লালবাগে রয়েছেন।
এদিকে, আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে বুয়েট শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সকালে। ওই মিছিল থেকে তারা ঘোষণা দেন, বিকেল ৫টার মধ্যে উপাচার্য সাইফুল ইসলাম ক্যাম্পাসে না এলে তারা বুধবার থেকে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেবেন।
বিক্ষোভ মিছিল থেকে সাত দফা দাবিও উত্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা। ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এসব দাবি মেনে নেওয়া না হলে তারা বুয়েটের আগামী ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হতে না দেওয়ার ঘোষণা দেন। #