বিশেষ প্রতিনিধি, দূরবীণ নিউজ :
কোভিডের টিকা নিয়েও সরকার জনগনকে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার (২৮ জুলাই) বিকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “আমরা দেখলাম যে, কোবিডে তারা কিভাবে পুরো বিষয়টাকে উদাসীনতা, অযোগ্যতা, ব্যর্থতা দিয়ে জনগনের জীবন-জীবিকাকে বিপন্ন করে ফেলেছে। এখন মানুষকে এতো বেশি তারা প্রতারণা করে, এতো মিথ্যা কথা বলে, এতো ভাওতাবাজী করে। টিকাই এখন পর্যন্ত পুরো সংগ্রহ হলো না এবং এখন পর্যন্ত তিন কোটি টিকাই আনতে পারলো না ভারত থেকে।”
“ তারা এখন বলছে যে, ই্উনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেবে। এগুলো জাতিকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া আর কিছু নয়।এই সরকার এই একটা জিনিস খুব ভালো পারে অবলীলায় গোয়েবসীয় পদ্ধতিতে মিথ্যা প্রচার করতে থাকে এবং সেই মিথ্যাকে সত্য প্রমাণিত করতে থাকে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারে ধবংস করে দিয়েছে। আপনারা দেখেছেন যে, ভিখারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন সন্ত্রাসী দলবাজ মহিলাকে অধ্যক্ষ করা হয়েছে। আমরা দেখলাম যে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যাদেরকে উপাচার্য্ নিয়োগ দেয়া হলো তারা দুনীর্তি করছে, নিয়োগ দুর্ণীতি করছে..।
এভাবে তারা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধবংস করে ফেলেছে এবং এই করোনার অজুহাতে তারা শিক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে।” “ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে তো পুরোপুরি ভেঙে চূরমার হয়ে গেছে। ব্যাংকিং সেক্টারকে গিলে ফেলেছে। তারা আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধবংস করছে।”
বর্তমান সংকট উত্তরণে আন্দোলনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন চাই। সেজন্য আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি বন্দি হয়ে আছেন তাদের নেতৃত্বে আজকে দল সংগঠিত হচ্ছে। আমাদেরকে আন্দোলনে যেতে হবে এবং এই ভয়াবহ যে দানব আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে সেই দানবকে সরিয়ে দিতে হবে।”
“ আমাদের মনে রাখতে হবে এই দানব ছোট-খাটো দানব নয়, এটা একটা ভয়াবহ দানব। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত রয়েছে, সামাজ্যবাদ এবং আধিপত্যবাদের চক্রান্ত রয়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের অত্যন্ত শক্তি নিয়ে, আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে, জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করে এদেরকে সরাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ মানুষকে জাগাতে হবে, তাদেরকে নতুন স্বপ্ন দেখাতে হবে। মানুষকে সেই সুদিনের গান শুনাতে হবে যেন তারা জেগে উঠেন। তাদেরকে সেই পথ দেখাতে হবে। সেই পথ নিশ্চয়ই আমাদের নেতা তারেক রহমান নেতৃত্বে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবো।”
‘ওরা লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে’
মির্জা ফখরুল বলেন, “ যখন বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস পৃথিবীর সমস্ত মানুষের জীবনকে এলোমেলো করে দিচ্ছে বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল দে্শে সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকাকে বিপন্ন করে ফে্লেছে সেই সময়ে আওয়ামী অীগের সরকার সেই কোভিডকে পূঁজি করে তারা জনগনকে লুট করছে। তারা রাষ্ট্রের সম্পদ লুট করছে।”
“ যে কষ্টার্জিত অর্থ ট্যাক্স হিসেবে মানুষের দেয়, আমাদের প্রবাসীরা বিদেশে গিয়ে যে রেমিট্যান্স পাঠায়, আমাদের শ্রমিকেরা গার্মেন্টেসে কাজ করে যে অর্থ উপার্জন করে সেই অর্থ তারা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এটা আমার কথা নয়, এটা আপনি যেকোনো অর্থনীতিবিদ, পত্রপত্রিকা তারাও পরিস্কার করে লিখছে এখন একটা লুটের রাজত্ব চলছে।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আওয়ামী লীগ আসলে প্রকৃতিগতভাবে চরিত্রগতভাবে তারা একটা লুটেরা শ্রেনীর প্রতিনিধি। তারা আমরা দে্খেছি ১৯৭২-৭৫ সালে তারা ঠিক একই ভাবে লুট করেছে, এখন আবার দেখছি গত ১২ বছরে তারা সেই লুটের রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে।”
স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
গত বছর করোনায় আক্রান্ত বাবু মারা যান।
স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের সঞ্চালনায় এই আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, কামরুজ্জামান রতন, আজিজুল বারী হেলাল, মীর সরফত আলী সপু, একেএম ওয়াহিদুজ্জামান অ্যাপেলো, এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজাম, প্রয়াত শফিউল বারী বাবুর সহধর্মিনী বিথীকা বিনতে হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার, এসএম আসাদুজ্জামান নেসার, আনু মোহাম্মদ শামীম, ইয়াসীন আলী, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাদরেজ জামান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
/এডিজেড/একে।দূরবীণ নিউজ।