দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেছেন, আমরা এই শহরে সুন্দর ভাবে রাখতে চাই এবং সুন্দর দেখতে চাই।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কিন্তু কেউ কেউ নিজের স্বার্থে, সকলের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছেন। অনেকে বড় বড় হাউজিং করছেন, প্রজেক্ট সাইন, ব্যানার, সাইনবোর্ড ইত্যাদি দিয়ে লিখে রেখেছেন, ব্যবসা করছেন। ব্যবসা করেন, ভালো কথা, কিন্তু সেটারও ট্যাক্স দিতে হবে।
ঢাকা শহরকে আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছি, আমরা ডেঙ্গু থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করার জন্য কাজ করছি, বর্জ্য অপসারণের কাজ করছি, কিন্তু ট্যাক্স দেব না, এটা হতে পারে না। এটি হতে দেওয়া যাবে না।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গুলশানে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ পার্ক উব্ধোধন কালে মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
তিনি প্রয়াত মেয়র আনিসুল হককে স্মরণ করে বলেন, ঢাকার পার্ক, খেলার মাঠ উন্নয়ন আনিস ভাইয়ের একটি স্বপ্ন ছিল। তাঁর প্রতিটি স্বপ্নকে আমরা একে একে সফল করব। এই পার্কে ১৭ শত গাছ আছে। কোন গাছকে কাটা হয়নি। জনগণকে, স্থানীয় কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করে এই পার্কের ডিজাইন করা হয়েছে। এই পার্কে ইনডোর জিমনেশিয়াম আছে। আউটডোরেও জিমনেশিয়াম আছে। এই পার্কের ভেতরে একটি কফিশপও আছে।
এই পার্কে আসলে যে কারো মন ভালো হয়ে যাবে। গোস্বা নিবারণের জন্য ঘরে থাকতে হবে না, এই পার্কে আসলেই হবে। এখানে একটি মুজিব কর্নার রয়েছে, একটি লাইব্রেরি আছে সেখানে।
আতিকুল ইসলাম আরো বলেন, বাকি সাতাশটি পার্ক ও খেলার মাঠ দ্রুত উদ্বোধন করার জন্য আমি আমার টিমকে প্রেশার দিয়ে যাচ্ছি। দখল করে থাকা পার্ক, খেলার মাঠ উদ্ধারে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারণ পার্ক, খেলার মাঠ কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, বরং সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি। কেউ এগুলো দখল করে রাখতে পারবে না।
পাঁচটি পার্ক করতে গিয়ে দেখা গেল যে, দখলদাররা কন্ট্রাক্টরকে কাজ করতে দিচ্ছে না। আমি দখলদারদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা দ্রুত এসব ছেড়ে দিন। পার্কগুলোর ডিজাইন যখন করেছি, অর্থ বরাদ্দ যখন দিয়েছি, এইবার কিন্তু হবেই হবে।
মেয়র বলেন, এই শহরকে আমরা পরিষ্কার করতে চাই। আমার দায়িত্ব হচ্ছে ঢাকা শহরকে পরিষ্কার রাখা। ঢাকা শহরকে পরিষ্কার রাখার জন্য আমাদেরকে কাজ করে যেতে হবে। জাতির জনকের স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা, আর সোনার বাংলার রাজধানী এই ঢাকা শহর। ঢাকা শহরকে পরিষ্কার রাখতেই হবে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আপনারা দেখেছেন ফুটপাতের মধ্যে লোহা বালি ইট ইত্যাদি দিয়ে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে রাখা হয়েছিল। আমরা অভিযান চালিয়ে নির্মাণ সামগ্রী নিলামে দিয়েছি। আমাদের অভিযান চলমান থাকবে। যারা রাস্তায়, ফুটপাতে নির্মাণসামগ্রী রেখেছেন, দয়া করে সরিয়ে দেন।
ঝুলন্ত তার উচ্ছেদ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ১ অক্টোবর থেকে গুলশান থেকে ঝুলন্ত তার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। সার্ভিস প্রোভাইডারগণ অতি মুনাফা লাভের জন্য এগুলো ঝুলন্ত অবস্থায় রেখে দেয়। এই শহরকে নোংরা করে।
বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ পার্ক রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে মেয়র বলেন, এই পার্ক উন্নয়নে ১৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এই পার্কটি দেখাশোনার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এই পার্কের সম্পদ আমাদের সকলের, এখানে কিছু নষ্ট করা যাবে না। সবাই মিলে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।
১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার, ভারতের রাষ্ট্রদূত রীভা গাঙ্গুলী দাস, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নাহিদ এজাহার, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, প্রকল্প পরিচালক ড. তারিক বিন ইউসুফ, স্থপতি ইকবাল হাবিব বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠান শেষে মেয়র আতিকুল ইসলাম, রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার এবং রাষ্ট্রদূত রীভা গাঙ্গুলী দাস একটি করে গাছের চারা রোপন করেন এবং পরে উপস্থিত সবাইকে নিয়ে পার্কটি ঘুরে দেখান। # প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।