দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
জালিয়াতি, প্রতারণা ও প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর ভুয়া পরিচয়দানকারী নাইমুর রহমান জোয়ার্দার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক দিয়েছেন।এরর তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদের আদালতে আসামি নাইমুর রহমান জোয়ার্দার ১৬৪ দারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার আসামি নাইমুর রহমান জোয়ার্দার,ই তার (নাঈমুর) স্ত্রী জান্নাতুল নূর (২৬) ও নাইমুরের ভাই মশিউর রহমান (২০)।
এসআই আসাদুজ্জামান বলেন, গত মঙ্গলবার এই আসামিকে মিরপুর মডেল থানার প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। ওই সময় মামলার আসামি নাইমুর স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দিতে সম্মত হন। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২৬ এপ্রিল সিআইডির একটি টিম মিরপুর থানা এলাকা থেকে প্রতারক চক্রের মূলহোতা নাইমুর রহমান জোয়ার্দারকে গ্রেফতার করে। তার গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার মসজিদ পাড়ায়। তিনি সাভারের দক্ষিণ দরিয়াপুরের গেন্ডা এলাকায় থাকেন।
মামলায় অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৬ নভেম্বর মিরপুরের পাইকপাড়ায় বন্ধুর অফিসে নাইমুর রহমান জোয়ার্দার নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় ব্যবসায়ী হেলালুল মোজাদ্দেদের। নাইমুর নিজেকে পিডিবির উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বলে পরিচয় দেন। এরপর হেলালুলের সঙ্গে নাইমুরের বিভিন্ন সময় কথা হয়।
হেলালুলের মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে চুয়াডাঙ্গা যান নাইমুর। ফিরে এসে ৯ হাজার টাকা ভাড়াও পরিশোধ করেন। এভাবে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
একপর্যায়ে নাইমুরের কাছে কাজ চান হেলালুল। পিডিবির বিভিন্ন কেনাকাটা পাইয়ে দিতে অনুরোধ করেন। তখন নাইমুর রহমান তাকে নারায়ণগঞ্জের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনার কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বলেন। তিনি পিডিবির নারায়ণগঞ্জ প্রজেক্টের ক্রয়ের দায়িত্বে আছেন বলেও জানান।
হেলালুলকে প্রকল্পের জন্য প্রাইভেটকার, হাইয়েস মাইক্রোবাস, এসি, কম্পিউটার থাইগ্লাস, সিলিং ফ্যান, ওয়াল ফ্যান, গেট ইত্যাদি সরবরাহের জন্য লিখিত কার্যাদেশ দেন নাইমুর। নকল কার্যাদেশ তৈরি করে তার অনুলিপি হেলালুলকে দেয়া হয়।
ব্যাংক ড্রাফের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে এ কার্যাদেশের কথা বলে তার কাছ থেকে ৫২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন নাইমুর। নাইমুর রহমান জোয়ার্দার টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর মো. হেলালুল মোজাদ্দেকের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এরপর সন্দেহ হয় হেলালুলের।
তিনি নারায়ণগঞ্জে ২২৫ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, নাইমুর রহমান জোয়ার্দার নামে কোনো কর্মকর্তা সেখানে নেই। তখন বুঝতে পারেন যে, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনার পর গত ২৬ এপ্রিল মিরপুর মডেল থানায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী হেলালুল মোজাদ্দেদ (৪২) এ বিষয়ে একটি মামলা করেন।
#