দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
বহুল আলোচিত পি কে হালদারসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৩৪ কোটি টাকা পাচার ও আত্মসাতের অভিযোগে আরো ৫টি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
একই সঙ্গে পি কে হালদারের সহযোগী ৩৩ জনের বিরুদ্ধে সম্পদবিবরণীর নোটিশ জারির অনুমোদন দিয়েছে দুদক। বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (১) মামলাগুলো দায়ের হয়েছে। দুদক পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত ৯ মার্চ ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১০টি মামলার অনুমোদন দিয়েছিল দুদক। এর মধ্যে আজ ৫টি মামলা দায়ের হয়েছে। প্রতিটি মামলায় পি কে হালদারকে আসামি করা হয়েছে। দুদক কর্মকর্তা জানান, লিপারো ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের নামে ১৭৪ কোটি টাকা, আর বি এন্টারপ্রাইজের নামে ৫৫ কোটি টাকা, ওকায়ামা লিমিটেডের নামে ৮৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা, ইমেক্সোর নামে ৫৮ কোটি টাকা এবং কনিকা এন্টারপ্রাইজের নামে ৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখকরা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের এমডি মো. রাশেদুল, ভারপ্রাপ্ত এমডি মো. আবেদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এম এ হাশেম ,পি কে হালদারের সঙ্গে সহযোগিতা ও প্রতারণার মাধ্যমে কোনো মর্টগেজ গ্রহণ ছাড়াই ৫টি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৩৪ কোটি ছয় লাখ টাকা ভুয়া ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
আসামিরা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে ভুয়া কোম্পানি ও বিভিন্ন ব্যক্তির হিসাবে ওই অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছেন। আর এই ঘটনায় ৩৭ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায়রায় পৃথক ৫টি মামলা দায়ের করেছে দুদক। এর আগে অনুমোদন দেওয়া ১০টি মামলায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ভুয়া ঋণের নামে তুলে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
অনুমোদন দেওয়া প্রতিটি মামলায় রিলায়েন্স লিজিং ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) আসামি করা হয়েছে। গত ২৫ জানুয়ারি পি কে হালদার কেলেঙ্কারিতে ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩৩ শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৫টি মামলা করে দুদক।
ওই মামলায় আনান কেমিক্যাল লিমিটেডের নামে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা, সুখাদা প্রোপার্টিজ লিমিটেডের নামে ৬৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা, মেসার্স বর্ণের নামে ৬৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, রাহমান কেমিক্যালস লিমিটেডের নামে ৫৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ও মুন এন্টারপ্রাইজের নামে ৮৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
এদিকে দুদক পি কে হালদার কেলেঙ্কারিতে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ১০ জন। গত ১৬ মার্চ নাহিদা রুনাই, সৈয়দ আবেদ হাসান ও রাফসান রিয়াদ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। এই ৩জন ৫দিনের রিমান্ডে আছেন। এর আগে পি কে হালদারের সহযোগী শংখ বেপারী, রাশেদুল হক এবং সর্বশেষ অবন্তিকা বড়াল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।/