দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
কাস্টমস কর্মকর্তা কে এম সিদ্দিকুর রহমানকে অবৈধ সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও দুর্নীতির অভিযোগে করা এক মামলায় ৮ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দিয়েছেন বিচারিক বিশেষ জজ আদালত। একইসঙ্গে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪২ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
২৯ মে সন্ধ্যায় যশোরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। ৩০ মে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন যশোর দুদকের পাবলিক প্রসিউটিকর (পিপি) অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম।
তিনি জানান, সাজাপ্রাপ্ত আসামী কেএম সিদ্দিকুর রহমান কাস্টমসের সাবেক পরিদর্শক ছিলেন। তিনি যশোর শহরের ঘোপ সেন্টাল রোডের কবি গোলাম মোস্তাফা বাইলেনের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি জেল হাজতে রয়েছেন। কাস্টমস এক্সাইজ ভ্যাট যশোরের পরিদর্শক কেএম সিদ্দিকুর রহমান ১৯৯৮ সালের ৭ জুন দুদকের নোটিশ অনুযায়ী তার অর্জিত সম্পদের বিবরণ জমা দেন। এ বিবরণীতে তিনি শহরের ঘোপ সেন্টাল রোডে ৯ দশমিক ৯৫ শতক জমির ওপর একটি দ্বিতল বাড়ি আছে বলে উল্লেখ করে ছিলেন। তিনি ও তার স্ত্রী মিলে ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে এ বাড়িটি নির্মাণ করেছেন বলে উল্লেখ করেন।
আসামীর দাখিল করা এ সম্পদ বিবরণীর প্রাথমিক তদন্তে বাড়িটি নির্মাণ করতে ৩৪ লাখ ৫৯ হাজার ৮৫৬ টাকা ব্যয়ের তথ্য পাওয়া যায়। তিনি আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করতে বাড়ির দাম নির্ধারণ করে ছিলেন ১৩ লাখ টাকা। এ বাড়ির জমি থেকে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে ১ দশমিক ১৯ শতক দান করেছেন বলেও মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন হিসাব বিবরণীতে।
২০০২ সালের ৩১ অক্টোবর তৎকালীন দুদক কর্মকর্তা আরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তে ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪২ টাকার সম্পদ আয় বহির্ভূত বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। কেএম সিদ্দিুকুর রহমান সম্পদের হিসাব বিরবণীতে ওই সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। তদন্ত শেষে আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় সিদ্দিকুর রহমানকে অভিযুক্ত করে ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ আহমেদ।
সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন আইনের ২৬ ( ২) ধারার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে ৩ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন। ২০০৪ সালের দুদক আইনের ২৭ (১) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে আরও ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। উভয় সাজা একইসঙ্গে চলবে।
এ ছাড়া রায়ে আয় বহির্ভূত অর্জিত সম্পদ ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪২ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। #