দূরবণ নিউজ ডেস্ক :
অবশেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে ডেসটিনি ২০০০ লিমিটিডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিএসএমএমইউ থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর আজ শনিবার (৩ জুলাই) বিকেলে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয় তাকে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে রফিকুল আমীনকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ এর আগে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন আছেন রফিকুল আমীন। সেখানে বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালন করা কারারক্ষীদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিকভাবে সেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিও কাজ শুরু করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর নেওয়া হবে চূড়ান্ত ব্যবস্থা।
ডায়াবেটিসজনিত অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দুই মাস ধরে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের প্রিজন সেলে আছেন রফিকুল। অসুস্থতার অজুহাত কাজে লাগিয়ে তিনি কারা তত্ত্বাবধানে থেকেও ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জুম মিটিংয়ের সাম্প্রতিক কিছু ভিডিওতে তাকে নতুন এমএলএম ব্যবসা নিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে। নতুন প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনি শিগগিরই এক হাজার ৩০০ মার্কেটিং এজেন্ট নিয়োগের কথা বলছেন। মিটিংয়ে ডেসটিনির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও যুক্ত ছিলেন।
এ নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কারা অধিদপ্তর। ওই কমিটির প্রধান কারা অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ঢাকা) তৌহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, তারা শুক্রবার থেকে কাজ শুরু করেছেন। জুম মিটিংয়ের অভিযোগ এবং এ সম্পর্কিত সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করছেন।
কারা সূত্র জানায়, প্রিজন সেলের বন্দিদের নিরাপত্তায় বিভিন্ন পর্যায়ের কারারক্ষীরা সম্পৃক্ত থাকেন। এ কারণে দায়িত্বের ধরন অনুযায়ী বিএসএমএমইউর প্রিজন সেল-সংশ্নিষ্ট ১৭ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর মধ্যে সাতজন সহকারী প্রধান কারারক্ষী ও ছয়জন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তদন্তে উঠে আসা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। আর তাদের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা চার প্রধান কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের এমডি রফিকুল আমীন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। ওই বছরের অক্টোবরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে চার হাজার ১১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও ৯৬ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ করেছে দুদক। #