দূরবীণ নিউজ ডেস্ক:
অবশেষে বহুল আলোচিত বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
আজ বুধবার (৭ জুলাই) এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) থেকে দেয়া এক চিঠিতে তাদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে।
সিআইসি থেকে দেওয়া চিঠি বাংলাদেশের সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো হয়েছে। এনবিআরের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের ১১৬ ধারা অনুযায়ী ব্যাংক হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলন/স্থানান্তর স্থগিত করা হয়েছে বলেও চিঠিতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, সরকারি রাজস্ব স্বার্থ সংরক্ষণের স্বার্থে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ১১৬ এ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ব্যাংকে পরিচালিত সব হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলন ও স্থানান্তর স্থগিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরাধ করা হলো।
একইসঙ্গে স্থগিতাদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করে এ সংক্রান্ত একটি পরিপালন প্রতিবেদন (হিসাবসমূহের সর্বশেষ স্থিতি উল্লেখসহ) জরুরি ভিত্তিতে অবগত করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।
এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি এস কে সুর চৌধুরী ও নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমসহ তাদের স্ত্রীদের ব্যাংক হিসাব তলব করে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দেয় এনবিআর।
ওই চিঠিতে সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুপর্না সুর চৌধুরীর এবং বর্তমান নির্বাহী পরিচালক মো. শাহ আলম, তার দুই স্ত্রী শাহীন আক্তার শেলী ও নাসরিন বেগমের সঞ্চয় হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব ও বিদেশি মুদ্রার হিসাব, ক্রেডিট কার্ড, ভল্ট, সঞ্চয়পত্র, ডিপোজিট স্কিম ও বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টসহ সব ধরনের হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আজ এসকে সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হলো।
এর আগে ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, পিপলস লিজিং ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের মতো একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। যাদের সহযোগিতা করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী ও নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম। ঘুষের বিনিময়ে গুরুতর অনিয়মে সহায়তা করেছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থার আরও বেশ কিছু কর্মকর্তা।
এছাড়া আদালতে ১৬৪ ধারায় ঘুষ কেলেঙ্কারির স্বীকারোক্তি দেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি বলেন, একাধিক ব্যাংকার ও ব্যবসায়ী পিপলস লিজিংয়ের আর্থিক ভীত ধ্বংস করে দিয়েছে। জবানবন্দিতে প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাটে জড়িত হিসেবে শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেটের পরিচালক (অর্থ) আরেফিন শামসুল আলামিন, প্রতিষ্ঠানের সাবেক চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন (অব.) মোয়াজ্জেম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস০কে সুর ও সাবেক জিএম (বর্তমানে নির্বাহী পরিচালক) শাহ আলমের নাম উল্লেখ করেন।#