দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এজিএম এবং যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইদ্রিস আলী মিয়া (৬৭) প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে ৭২ লাখ টাকা হারিয়েছেন। তিনি একটি কোম্পানির অংশীদারের প্রলোভনে পড়ে ৭২ লাখ টাকা খুইয়েছেন। তবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এ ঘটনায় প্রতারক চক্রের মূলহোতা জহিরুল ইসলাম বিপু (৪২), গোলাম মাওলা (৪৫) ও এবায়েদ উল্ল্যা (৪২)কে গ্রেফতার করেছে ।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, এ চক্রটি ভাল বেতনে চাকরি ও ব্যবসায় অংশীদারত্ব দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
গত ৮ জুন দিবাগত রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের ওই তিনজনকে গ্রেফতার করে সিআইডির কর্মকর্তারা।
বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, রাজধানীসহ বেশ কয়েকটি বিভাগীয় শহরে চিকিৎসা ভাতা ও ট্রান্সপোর্ট সুবিধাসহ আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি দেওয়া হবে- জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকায় এ রকম বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিলো চক্রটি। অবশেষে তাদের প্রলোভনে পড়ে ৭২ লাখ টাকা খোয়ালেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী
‘বড় বড় শহরের বাণিজ্যিক এলাকায় বহুতল ভবনে স্বল্প সময়ের জন্য অফিস ভাড়া নিয়ে চাকরি প্রার্থীদের আকৃষ্ট করতো তারা। এরপর ইন্টারভিউয়ের পর উচ্চ বেতনে শর্তসাপেক্ষে তাদের নিয়োগ দিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করা হতো। কিছুদিন অতিবাহিত হলে ওই কোম্পানির অংশীদার করার প্রলোভনে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে ভাড়া করা অফিসে তালা ঝুলিয়ে লাপাত্তা হয়ে যেতো চক্রটি।’
‘প্রথমে এই চক্রটি পদ্মা ট্রেডিং করপোরেশন নামে প্রচারণা শুরু করে। এ প্রতিষ্ঠান সাফল্য লাভ করার পর, ওই নাম ও অফিসের স্থান পরিবর্তন করে এনটিসি নামে আরও একটি প্রতিষ্ঠান খুলে প্রতারণার কার্যক্রম অব্যাহত রাখে তারা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে তাদের প্রতারণার নেটওয়ার্ক। নেটওয়ার্কের সদস্যদের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখিয়ে তাদের সুসজ্জিত অফিসে ডেকে নিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তারা।’
‘এরপর প্রতারক চক্রটি ব্যাংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত পুরুষ ও নারীদের টার্গেট করতো। পরে ভুক্তভোগীরা প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে খুব বেশি চাপাচাপি করলে তাদের টাকা ফেরতের মিথ্যা আশ্বাস হিসেবে চেক দিতো তারা। তবে চেক ডিজঅনার হওয়ার পর ভুক্তভোগীদের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যেতো তারা।’
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, একজন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগের ভিত্তিতে এই চক্রকে গ্রেফতার করা হয়। ভুক্তভোগী তার জমানো ৭২ লাখ টাকা হালাল ব্যবসার জন্য বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার হন। #