দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন ঘোষণা দিয়েছেন, আগামি ৭ দিনের মধ্যে তার নিয়ন্ত্রিত ঝুঁকিপূর্ণ ৬টির ওয়ার্ডের মশা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ঢাকা দক্ষিণকে মশা মুক্ত করতেই বিশেষ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কলাবাগান মাঠে এডিস মশা নির্মূলের জন্য ডিএসসিসির সপ্তাহব্যাপী বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রামের উদ্বোধনকালে মেয়র সাঈদ খোকন এই ঘোষণা দেন।
ডিএসসিসির মেয়র বলেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে এর উৎস নির্মূল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য নাগরিকদের সচেতনতা হওয়া এবং নিজ নিজ বসত বাড়ি, আঙিনা ও এর আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এর অংশ হিসেবেই স্পেশাল ক্র্যাশ প্রোগ্রামের উদ্বোধন করা হলো।
তিনি বলেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে নাগরিকদের সচেতন হওয়া এবং নিজ নিজ বসতবাড়ি, আঙিনা ও এর আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নাগরিকদের এডিস মশার প্রকোপ থেকে রক্ষাকল্পে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মেয়র বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের জরিপ অনুযায়ী ডিএসসিসি’র ৫, ৬, ১১, ১৭, ৩৭ ও ৪২ ওয়ার্ডকে ঝুঁকিপূর্ণ। আগামী এক সপ্তাহ মশকনিধন কর্মী ও পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শকরা এসব এলাকার প্রতিটি বাড়ি পরিদর্শন করে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে ধ্বংস করবেন।
এছাড়া লার্ভা ধ্বংসের কৌশল শিখিয়ে দেবেন। এরপরও কেউ সচেতন না হলে এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর মনে হলে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ক্র্যাশ প্রোগ্রামের উদ্বোধনকালে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ ইমদাদুল হক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহমেদ, সচিব মোস্তফা কামাল মজুমদার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামানসহ বিভিন্ন দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দিকে নগরীতে শীত কমার সাথেই সাথেই বেড়েছে মশার উৎপাত:
দিন দিন দুর্ভোগের নগরীতে পরিণত হচ্ছে রাজধানী ঢাকা। কোনো মৌসুমেই নগরবাসী স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারছে না। বর্ষাকালে ভুগতে হয় জলাবদ্ধতায় আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলার দুর্ভোগ।
এখন পোহাতে হচ্ছে মশার উৎপাত। ঘরে-বাইরে, বাসা কিংবা অফিস সব জায়গায় মশা। শীত কমতে থাকার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীতে বেড়েছে মশার উৎপাত। মশক নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে গতবারের মতো এবারও ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজধানীবাসীর অভিযোগ, মশক নিধন কর্মীদের মাঠে তেমন দেখা যায় না। ডেঙ্গু যখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল সে সময় মশক নিধন কার্যক্রম ব্যাপকভাবে পরিচালিত হলেও পরে তা ঝিমিয়ে পড়েছে। অথচ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঘোষণা দিয়েছিল ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বছরজুড়ে কাজ করবে তারা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু বিশেষ মৌসুম বা নির্দিষ্ট সময়ে ডেঙ্গুবিরোধী তৎপরতা চালালে হবে না। বরং বছরব্যাপী এ কার্যক্রম জোরদার রাখতে হবে।
গতবছর ডেঙ্গুর সময় সিটি করপোরেশন যেভাবে মাঠে নেমেছিল পরবর্তী সময়ে মশক নিধন কর্মীদের আর সেভাবে ওষুধ ছিটাতে দেখা যায়নি। তদের গতি কমেছে। এ সুযোগে বেড়েছে মশা। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর ঘরের বাইরে কোথাও দাঁড়ালেই ঝাঁকে ঝাঁকে মশা ঘিরে ধরছে। বাসায় তো মশারি ছাড়া টেকাই যায় না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু বিশেষ মৌসুম বা নির্দিষ্ট সময়ে মশকবিরোধী তৎপরতা দেখালে হবে না। বরং বছরব্যাপী এ কার্যক্রম জোরদার রাখতে হবে। অনেক দিন ধরে কোনো বৃষ্টিপাত না থাকায় ড্রেন ও ডোবায় মশা জন্মানোর স্থানগুলোতে পানির অর্গানিক ম্যাটারিয়াল বেড়েছে। মশা জন্মানোর সময় জরুরি ভিত্তিতে লার্ভিসাইড ছিটানো না হলে মশার উপদ্রব আরও বাড়বে। # কাশেম