সর্বশেষঃ
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৭ অপরাহ্ন

মানবতাবিরোধী মামলায় হাসিনা-কামালের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল দায়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারিক আদালত আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউশন টিম ওই রায়েরে বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন । আপিলে দণ্ড বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে এই আপিল আবেদন করা হয়। বিষয়টি আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের জানান, গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে দুটি সাজা দেওয়া হয়। একটি আমৃত্যু কারাদণ্ড, আরেকটি মৃত্যুদণ্ড। আজ আমরা আমৃত্যু কারাদণ্ড বাড়িয়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করেছি। আপিলে আমরা মোট আটটি যুক্তি (গ্রাউন্ড) দিয়েছি।

গাজী তামিম জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আমৃত্যু কারাদণ্ডকে মৃত্যুদণ্ডে উন্নীত করার জন্য আটটি গ্রাউন্ডে আপিল করেছি। প্রথম গ্রাউন্ড হলো- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে যে শাস্তির কথা বলা আছে, তার প্রথমেই ডেথ পেনাল্টি দিয়ে বর্ণনা করা আছে। তারপরে গ্রাভিটি অব দ্য অফেন্সের কথা বলা আছে। যেহেতু আইনে একটি শাস্তি প্রেসক্রাইব করা আছে, এজন্য ডেথ পেনাল্টি তারা সব চার্জেই পাওয়ার যোগ্য। এটা আমাদের প্রথম গ্রাউন্ড ছিল।

দ্বিতীয় গ্রাউন্ডে আমরা বলেছি- জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, সেটা হলো ভায়োলেশন অব সিরিয়াস হিউম্যান রাইটস। সেখানে জঘন্য অপরাধ হয়েছে। যার শাস্তি একমাত্র মৃত্যুদণ্ডই হওয়া উচিত। তৃতীয় গ্রাউন্ডে আমরা বলেছি- স্কেল অব অ্যাটাক যেটা অ্যাগেইনস্ট সিভিলিয়ান, নিরস্ত্র, নিরীহ মানুষের ওপরে হয়েছে তার ব্যাপকতা ছিল মারাত্মক। এর কারণে মৃত্যুদণ্ড ছাড়া অন্য কোনো শাস্তি দেওয়া আইনত ঠিক হয়নি।

তামিম বলেন, পঞ্চম গ্রাউন্ডে আমরা বলেছি, শুধু আসামির অধিকার দেখলেই হবে না। এখানে রাইটস অব দ্য ভিকটিমস এবং সোসাইটির রিজনেবল এক্সপেক্টেশনটাও দেখতে হবে। একটা সমাজ এই ধরনের অপরাধের কী ধরনের শাস্তি প্রত্যাশা করে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধপ্রবণতা বন্ধ করার জন্য আদালত কর্তৃক কী ধরনের শাস্তি প্রাপ্ত হলে বা প্রদত্ত হলে সমাজ এই ধরনের অপরাধ থেকে মুক্ত হবে। ষষ্ঠ গ্রাউন্ডে বলেছি- এই আসামিরা ইচ্ছাকৃতভাবে পলাতক আছেন। তারা জানছেন যে তাদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মামলা চলছে, সাজা হচ্ছে, আপিলের মেয়াদ শেষ। এগুলো জেনেও তারা নিজেদের পলাতক রেখেছেন এবং পলাতক থেকে বিভিন্ন ট্রায়ালে বাধা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন বক্তব্য, বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন।

এর আগে, গত ২৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ট্রাইব্যুনালে গত ১৭ নভেম্বর দেওয়া রায়ের কপি তারা পেয়েছেন। সেখানে দেখেছেন যে একটি অভিযোগে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেকটি অভিযোগে দুজনকেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। প্রসিকিউশন প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে অভিযোগে দুজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগে আপিল করা হবে। অভিযোগের শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড চাওয়া হবে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করা হলো।

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং মামলার রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। গত ১৭ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেন। এখন ঘোষিত রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি (কপি) হাতে পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার রাষ্ট্র ও আসামি মামুনের পক্ষের আইনজীবীরা।

#


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

[prayer_time pt="on" sc="on"]

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12