কুবি প্রতিনিধি : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিডটার্ম পরীক্ষায় উত্তরপত্রের সংকটের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তিন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত চিঠিগুলোতে ২ অক্টোবর (বুধবার) উল্লেখ থাকলেও তিন শিক্ষকের কাছে গত বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে চিঠি পৌঁছে দেয়া হয়।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকার, আইসিটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোঃ তোফায়েল আহমেদ ও মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসানের কাছে আলাদা আলাদা চিঠির মাধ্যমে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বন্ধ না করে পরীক্ষা নেওয়ায় যদি অপরাধ হয় এবং এজন্য যে শোকজ দেওয়া হয়েছে সেটা খুবই হতাশাজনক। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বছরের শুরুতে যেখানে সরকার শিক্ষা উপকরণ পৌঁছে দেয়, সেখানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন অর্থ বছরের চার মাস পার হলেও পরীক্ষার উত্তরপত্র সংকট এটাই তো একটা বিস্ময়।’
তিনি আরো বলেন, ‘যেখানে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও রেজিস্ট্রার বলেছেন টেন্ডার জটিলতার কারণে উত্তরপত্র পর্যাপ্ত নেই, সেখানে এই শোকজ কিসের ইঙ্গিত’।
মার্কেটিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, কন্ট্রোলার সেকশনে ৫ হাজার খাতার চাহিদা দিয়েছিলাম, সেখানে চার-পাঁচ মাস আগে ২ হাজার খাতা দিয়েছিল। ২ হাজার খাতা শেষ হওয়ার পর আবারও বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য চাহিদা দেয়া হলে খাতা দেওয়া হয় মাত্র ১৫০টি। যেখানে একটা কোর্সের দুইটা মিডটার্ম নিতেও ১২০টি খাতা শেষ হয়ে যায়। অথচ পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পর্যাপ্ত খাতা ছিল বল যে দাবি করা হচ্ছে এটা প্রশাসন ভালো জানে।
আইসিটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোঃ তোফায়েল আহমেদ কারণ দর্শানোর নোটিশ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন , ‘আমি এখনও চিঠি হাতে পায়নি তাই এ বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে পারব না’।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহের বলেন, ‘পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পর্যাপ্ত খাতা থাকা সত্বেও তারা কেন দোকান থেকে ক্রয়কৃত কাগজে পরীক্ষা নিয়েছে এবং কেন একটি পরীক্ষা স্থগিত করেছে সেই কারণ জানার জন্যই তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এটা শোকজ নয়। এ ঘটনার পেছনে মূল কারণ কী, সেটা জানার জন্যই তাদেরকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য, বেশ কয়েকদিন ধরেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিডটার্ম পরীক্ষার উত্তরপত্রের সংকট রয়েছে। তাই বিভিন্ন বিভাগ থেকে প্রয়োজন মতো চাহিদা দিলেও তারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী খাতা পেত না।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর মার্কেটিং বিভাগের একটি ব্যাচের মিডটার্ম পরীক্ষা নিতে যায় বিভাগটির সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান। কিন্তু পরীক্ষা নেওয়ার সময় বিভাগে উত্তরপত্র না থাকায় পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা দোকান থেকে কাগজ কিনে ঐ পরীক্ষাটি দেয়।
এছাড়া, ওই দিনই মিডটার্মের উত্তরপত্র না থাকায় আইসিটি বিভাগের একটি ব্যাচের মিডটার্ম পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এ সংকট নিয়ে দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন জাতীয় ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার জের ধরে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।